প্রাথমিক পর্যায়ে একে অপরের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলা থেকে শুরু করে চলাফেরা নজরে রাখা কোনরকম অনুমতি না নিয়ে মোবাইল ফোন বা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের গতিবিধি চেক করা, ফোনে আড়ি পাতা বন্ধুদের সাথে মিশতে না দেওয়া এ ধরনের লক্ষণ গুলি দেখতে পাওয়া যায়। প্রিয় মানুষটির উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করার জন্য নানা ধরনের বিধিনিসের বা শর্তাবলী বেষ্টিত করে একে অপরকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। কোন প্রকার যুক্তি ছাড়াই পরকীয়ার অভিযোগ আনে একে অপরের বিরুদ্ধে। শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। কখনো সন্দেহ ফুল প্রমাণ হলেও সেই সন্দেহ রাখা বিশ্বাস বোধের অভাব তৈরি করে।
সমস্যা হল এই বিষয়টিকে আমরা সাধারণত কোন প্রকার মানসিক রোগ বলে বিবেচনাই করি না। যার পরিণতি আজ আমরা দেখতে পাই। অথচ এটি একটি সাধারণ রোগ যার পোশাকি নাম "ওথেলো সিনড্রোম" । পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে বয়সে কোনরকম সীমারেখা তোয়াক্কা না করে এই রোগের আক্রান্ত যে কেউ হতে পারে। সন্দেহ পরায়ণতার ভিত্তিতে একে "প্যাথলজিক্যাল জেলাসি" বা "মরবিড জেলাসি" ও বলা হয়ে থাকে। এটা এক ধরনের "অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার" বা ওসিডি।
মূলত সঙ্গীর উপর মাত্রাতিরিক্ত আকর্ষণ, নিরাপত্তাহীনতা, আত্মবিশ্বাসের অভাব, ভালোবাসার ঘাটতি, সঙ্গীকে হারানোর ভয় এর মত অসংখ্য প্রাথমিক কারণ রয়েছে এই রোগের পিছনে। যদিও পরোক্ষভাবে মাদকাসক্তি, সিজোফ্রেনিয়া, ডিপ্রেশন অন্যান্য ডিসঅর্ডার এর মত বিষয় একে প্রভাবিত করে।
তবে যোগ্য চিকিৎসক দ্বারা রোগের প্রকৃত মূল্যায়ন করে নিয়ন্ত্রণ বা নিরাময় সম্ভব। এক্ষেত্রে কাউন্সিলিং এর পাশাপাশি ওষুধ পত্রের এমনকি প্রয়োজনে হসপিটালাইজেশনের ও দরকার হতে পারে। এক্ষেত্রে একজন ও দক্ষ চিকিৎসকই সঠিক দিশা দেখাতে পারেন। তবে কাউন্সিলিং এর ক্ষেত্রে দুই সঙ্গীর ই ভূমিকা আবশ্যক।